থিয়েরি কাজেনিজা যুদ্ধবিধ্বস্ত বুরুন্ডিতে ছোটবেলা থেকে নারী ও মেয়েদের প্রতি দুর্ব্যবহার দেখে দেখেই বেড়ে উঠেছেন। থিয়েরি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর সমবয়সী একজনকে সঙ্গে নিয়ে আইসিওরে সি’মাহোরো (বরুন্ডির ভাষা কিরুন্ডিতে অর্থ “শান্তির আয়না”) নামে একটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ তৈরি করে বুরুন্ডির এনগোজি প্রদেশে মানবাধিকার ও স্বাস্থ্য কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে কাজ করা শুরু করেন।
কাজেনিজা নারী ও মেয়েদের সহায়তা করার জন্য আটটি উপায়ের কথা বলেন, এগুলো হলো:
১. উত্তম আইন পাস করা। নারীদের ধর্ষণ, মারধোর, গালাগালি, নারীর ভগাঙ্কুরচ্ছেদ, নির্যাতন, “সম্মান

রক্ষার্থে” হত্যা ও পাচারসহ বৈষম্য ও সহিংসতা থেকে নারীদের নিরাপত্তা দিতে নতুন আইন প্রণয়ন এবং বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করা।
২. মেয়েদের শিক্ষিত করা। মেয়েদের শিক্ষার গুরুত্ব এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের অবদানের বিষয়গুলো তুলে ধরা ও প্রচার করা।
৩. বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা। নারী ও মেয়েদের দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্তর্ভুক্ত করে বিরোধ সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া।
৪. নারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া। দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে নারীদের অর্থ আয়ের সামর্থ্য বাড়ানো।
৫. বাল্য বিয়ে বন্ধ করা। বাল্য বিয়ের মাধ্যমে মানবাধিকার লংঘনের যে ঘটনা ঘটে, সেই বিষয়ে জনসাধারণকে সংবেদনশীল করে বাল্য বিয়ে বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ।
৬. নারীদের ভোট দিতে উত্সাহিত করা। নারীদের ভোটের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলা এবং নারী প্রার্থীদের উত্সাহিত করা।
৭. দারিদ্র্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো, বিশেষ করে পল্লী এলাকায় বসবাসকারী নারীরা যে ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হন।
৮. মানবাধিকার বিষয়ে ব্যাখ্যা করে বলা। জনসাধারণকে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় মানবাধিকার আইনের অধীনে তার করণীয় ও দায়-দায়িত্ব সম্পর্কে জানানো।
২০১০-এ জোহানেসবার্গে আয়োজিত “ম্যান আপ ইয়াং লিডারস সামিট”-এ আমন্ত্রিত তরুণ আফ্রিকানদের একটি নির্বাচিত দলে কাজেনিজাও ছিলেন, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের দেশে ফিরে গিয়ে তাদের স্থানীয় কমিউনিটিতে জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠার কর্মকাণ্ড কীভাবে এগিয়ে নেয়া যায় সে নিয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন। (ম্যান আপ প্রচারাভিযানটি নিউইয়র্ক-ভিত্তিক ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ এবং ওয়াশিংটনের ভাইটাল ভয়েসেস গ্লোবাল পার্টনারশিপের একটি যৌথ উদ্যোগ।)।
কাজেনিজা জানিয়েছেন যে, বুরুন্ডির স্থানীয় এবং জাতীয় সরকার তাদের প্রতিষ্ঠান আইসিওরের কাজকে ইতিবাচক হিসেবে দেখে। তিনি বলেন, “আমরা সবাই একত্রিত হলে জেন্ডার সহিংসতার বিষয়টির সমাধান হবে।”
“সকল নারীর ভয়মুক্ত জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে“ — প্রেসিডেন্ট ওবামা
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ওবামা যৌন নিপীড়ন বন্ধে সহায়তা করার জন্য “ইটস অন আস” নামে এক প্রচারাভিযান শুরু করেছিলেন। এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট এবং অন্যান্য উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও খ্যাতিমান ব্যক্তিরা যৌন নিপীড়ন বন্ধে সকল আমেরিকানকে দূরে না থেকে এই সমস্যার সমাধানের অংশ হতে ব্যক্তিগতভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।