বাইডেন উচ্চাভিলাষী নতুন সব উদ্যোগ নিয়ে ‘সামিট ফর ডেমোক্রেসি’ শুরু করেছেন

বাইডেন টেবিলে বসে হাত নেড়ে কথা বলছেন (© নিকোলাস কাম/এএফপি/গেটি ইমেজেস)
প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত ৯ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে তাঁর আয়োজিত গণতন্ত্রের জন্য শীর্ষ সম্মেলনে অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা করাকে আমাদের সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেছেন। (© নিকোলাস কাম/এএফপি/গেটি ইমেজেস)

প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত ৯-১০ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকে সমর্থন করার জন্য পাঁচ-দফা পরিকল্পনাসমৃদ্ধ সামিট ফর ডেমোক্রেসি (গণতন্ত্রের জন্য শীর্ষ সম্মেলন) আয়োজন করেন। উদ্যোগগুলোর মধ্যে স্বাধীন গণমাধ্যমকে শক্তিশালী করা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার বিষয়গুলোও রয়েছে।

“গণতন্ত্রের জন্য চ্যাম্পিয়ানদের প্রয়োজন,” উল্লেখ করে বাইডেন বিশ্বে এই প্রথমবারের মতো আয়োজিত গণতন্ত্র বিষয়ক এই ভার্চুয়াল সম্মেলনে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে আমরা সকলেই জানি যে আমাদের গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য ……অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়।”

প্রেসিডেন্ট বাইডেন গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার সাহসী ও বাস্তব উপায় নিয়ে আলোচনা করার জন্য সরকার, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ ও বেসরকারি খাতকে একত্রিত করেছিলেন।

প্রেসিডেন্ট বলেন, গণতন্ত্রের মতো কঠিন কাজ ঐক্যমত ও সহযোগিতার মাধ্যমে সর্বোত্তমভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। “এটি আমাদের সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ,” উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে সঙ্গে নিয়ে বলেন, “জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা সরকার এবং জনগণের জন্য সরকার ধারণা কখনো কখনো ভঙ্গুর হয়ে উঠতে পারে, কিন্তু গণতন্ত্র নিজেই অভিঘাতসহনশীল হওয়ায় এর নিজস্ব সংশোধিত হওয়ার ও উন্নতি করার সক্ষমতা রয়েছে।”

প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন একটি টেবিলের পাশে বসে পর্দায় দেখানো অংশগ্রহণকারীদের দিকে তাকিয়ে আছেন (© সুসান ওয়ালশ/এপি ইমেজেস)
প্রেসিডেন্ট বাইডেন (বায়ে) ৯-১০ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের জন্য শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানকারী নেতাদের স্বাগত জানাচ্ছেন; সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তাঁকিয়ে দেখছেন। (© সুসান ওয়ালশ/ এপি ইমেজেস)

সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের অভিঘাতসহনশীলতা ও মানবাধিকার জোরদার করতে ‘গণতান্ত্রিকতার নবায়নে প্রেসিডেন্টের উদ্যোগ’ (প্রেসিডেন্টসিয়াল ইনিশিয়েটিভ ফর ডেমোক্রেটিক রিনিউয়াল’) ঘোষণা করেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষে নিচের পাঁচটি ক্ষেত্রে উদ্যোগ প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে ৪২৪ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার বা ৩,৬৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে:

নতুন উদ্যোগগুলোর মধ্যে রয়েছে বহু দাতাসংস্থার ‘ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর পাবলিক ইন্টারেস্ট মিডিয়া’-কে সহায়তা করা। এই তহবিল থেকে সীমিত সম্পদ কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে কাজ করছে এমন স্বতন্ত্র গণমাধ্যম বা মিডিয়াকে সহায়তা করা হবে। এছাড়াও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে সেন্সরশিপ থেকে সুরক্ষা দিতে এই কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা করা হবে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন থেকে ‘ডেমোক্রেসিস এগেইনস্ট সেফ হেভেনস ইনিশিয়েটিভ’ (নিরাপদ স্বর্গের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক উদ্যোগ) নামে একটি কর্মসূচি চালু করেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজদের অবৈধ কার্যকলাপের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ গোপন করার প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করা হবে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীদের উপস্থিতি জোরদার করতে এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট ‘নারী ও মেয়েদের নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের উদ্যোগ’ (অ্যাডভান্সিং উইমেন্স অ্যান্ড গার্লস সিভিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল লিডারশিপ ইনিশিয়েটিভ) নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

“গণতন্ত্র কোন দৈবঘটনা নয়,” উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, “আমাদের প্রতিটি প্রজন্মের সাথে এটি নবায়ন করার দরকার রয়েছে।”

ব্লিঙ্কেন বলেন, “আমাদের প্রতিটি দেশ যখন প্রকৃত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, আমরা এটাও জানি যে সেই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার এবং মানুষের মর্যাদাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো গণতন্ত্র।”