বাইডেন নতুন ‘ন্যায্য, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল’ অভিবাসন ব্যবস্থার নির্দেশনা দিয়েছেন

প্রেসিডেন্ট বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য ২ ফেব্রুয়ারি তিনটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন।

তার নেওয়া এই পদক্ষেপ আফ্রিকান ও মুসলিম প্রধান দেশসহ কয়েকটি ছোট দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছিল এমন বৈষম্যমূলক অভিবাসনের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার অবসানে ২০ জানুয়ারিতে জারি করা নির্বাহী আদেশের ধারাবাহিকতা।

এক ব্যক্তি ডান হাত উচুঁতে তুলে ধরেছেন এবং অন্য হাতে সার্টিফিকেট ও ছোট পতাকা ধরে রেখেছেন (© চার্লি নেইবারগাল/এপি ইমেজেস)
আইওয়ার কোরালভিলের অ্যালেক্স হেইগেন ব্রাইট ২০২০ সালের ২২ জুন আইওয়ার ডেস মইনসে অবস্থিত প্রিন্সিপাল পার্কে আনুষ্ঠানিকভাবে আমেরিকার নাগরিকত্ব গ্রহণের লক্ষ্যে আনুগত্যের শপথ নিচ্ছেন। (© র্লি নেইবারগাল/এপি ইমেজেস)

“আর এভাবেই আমেরিকা অধিকতর নিরাপদ, শক্তিশালী এবং আরো বেশি সমৃদ্ধশালী হতে পারবে, যখন আমাদের একটি ন্যায্য, সুশৃঙ্খল, ও মানবিক, এবং আইনী অভিবাসন ব্যবস্থা থাকবে,” নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেছিলেন

তিনটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করে অভিবাসীদের স্বাগত জানানো, তাদেরকে পরিবার সদস্যদের নিয়ে একসঙ্গে থাকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পূর্ণ অবদান রাখতে উত্‌সাহিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও এই নির্বাহী আদেশগুলোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপত্তা চাওয়ার যোগ্যতা ও প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ করে এমন নীতিমালা পুনর্বিবেচনা, বাতিল কিংবা সংশোধন করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

হোয়াইট হাউজের মতে, এই নির্বাহী আদেশগুলোর মাধ্যমে অভিবাসন ব্যবস্থা বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে একত্রিতভাবে কাজ করার ভিত্তি তৈরি করে দেয়া হয়েছে।

প্রথম নির্বাহী আদেশ এর মাধ্যমে একটি টাস্কফোর্স তৈরি করা হয়েছে যারা দক্ষিণ সীমান্তে বিগত চার বছর ধরে পৃথক/বিচ্ছিন্ন হওয়া পরিবারগুলোর পুনর্মিলনের লক্ষ্যে কাজ করবে। মিডিয়াতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৪৫টি শিশু ও ৬২৮ জন মা-বাবা তখনো পুনর্মিলিত হয়নি।

“ঈশ্বরের অনুগ্রহে এবং প্রতিবেশীদের সদিচ্ছায় আমরা এই শিশুদের পুনরায় একত্রিত করব এবং অভাবী মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে আমাদের খ্যাতি ফিরিয়ে আনব,” বাইডেন ফেব্রুয়ারির ২ তারিখে নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেছিলেন।

দ্বিতীয় নির্বাহী আদেশ এর মাধ্যমে সেন্ট্রাল আমেরিকাতে অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় আমেরিকার সর্বোচ্চ মূল্যবোধকে ধারণ করে এমন বহুবিধ পদ্ধতি গ্রহণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

এই আদেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাইডেন প্রশাসন নর্দান ট্রায়েঙ্গেল নামে পরিচিত এল সালভেদর, গুয়েতেমালা ও হন্ডুরাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের মূল কারণগুলোর সমাধানে নিম্নলিখিত কাজ করার মাধ্যমে দেশগুলোর জনগণের উজ্জ্বলতর ভবিষ্যত গড়তে কাজ করবে:

  • দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা জোরদার করা এবং আইনের শাসনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
  • মানবাধিকার, শ্রম অধিকার ও মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতি (মানুষের) শ্রদ্ধা জোরদার করা।
  • অপরাধী চক্র, পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক ও অন্যান্য সংগঠিত অপরাধী সংগঠনসমূহের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য অপরাধ মোকাবেলা ও প্রতিরোধ করা।
  • যৌন সহিংসতা, জেন্ডার-ভিত্তিক ও পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করা।
  • অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা ও বৈষম্যের সমাধানে কাজ করা।

তৃতীয় নির্বাহী আদেশের লক্ষ্য হলো কৌশল প্রণয়নের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আইনী অভিবাসন ব্যবস্থার প্রতি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা যা যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী ও শরনার্থীদের একত্রীকরণ, অন্তর্ভুক্তিকরণ ও নাগরিকত্ব জোরদার করবে।