জো বাইডেন মাইক্রোফোনে কথা বলছেন (© প্যাট্রিক সেমানস্কি/এপি ইমেজেস)
প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন চলাকালে একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুম থেকে বক্তব্য দিচ্ছেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে জরুরী সমস্যা নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র এর ইউরোপীয় মিত্রদেশ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সহযোগীদের পাশে দাঁড়াবে।

১৯ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে বাইডেন ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উন্মুক্ত দেশগুলোর মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রশংসা করেন। বাইডেন নিশ্চিত করেন যে, কোভিড-১৯ মহামারী ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং ক্রমবর্ধমান স্বৈরতন্ত্র প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (NATO) জোটের সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপন করবে।

ভার্চুয়াল মাধ্যমে দেয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের সহযোগী দেশগুলোতে ও পুরো মহাদেশজুড়ে বিভিন্ন যৌথ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রোম থেকে রিগা পর্যন্ত রাজধানীগুলোর সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের NATO জোটের প্রতি পুরোপুরি অঙ্গীকারবদ্ধ।”

নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে নিরাপদ ও কার্যকর টীকা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা, কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনস গ্লোবাল অ্যাক্সেস ফ্যাসিলিটি (COVAX) কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন। অন্য দাতাদের প্রতিশ্রুত সহায়তা পূরণ সাপেক্ষে তিনি আরো ২ বিলিয়ন ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন: ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি আমাদের যৌথ লক্ষ্য ও মূল্যবোধকে এগিয়ে নিতে আমেরিকার সহযোগী গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করেছি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ নির্মূল, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সম্মিলিত সমৃদ্ধি অর্জনে আমি আমাদের সহযোগী দেশ ও মিত্রদের সাথে কাজ করবো।
আমেরিকা আবার তার পূর্বরূপে ফিরে এসেছে।

তিনি বলেন, ফসিলজাত জ্বালানি নির্ভরতা কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে মারাত্মক পরিণামগুলো এড়ানোর লক্ষ্যে গৃহীত উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিস চুক্তিতে পুনরায় যোগদান করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

তিনি আরো কিছু জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার রূপরেখা তুলে ধরেন যেগুলো উন্মুক্ত দেশগুলো কর্তৃক সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করা আবশ্যক। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • মুক্তভাবে ধারণা আদান-প্রদানের মাধ্যমে বিকশিত সৃষ্টিশীলতা ও উদ্ভাবনার সুরক্ষা প্রদান।
  • অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল বৃহত্তর পর্যায়ে ন্যায়সঙ্গতভাবে ভাগ করে নেয়া।
  • চীনের অর্থনৈতিক আগ্রাসন প্রতিহত করা।
  • পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ করা।

বাইডেন চীন সরকারের অর্থনৈতিক আগ্রাসন, রাশিয়ার হুমকি ও সাইবার আক্রমণ এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইরানী শাসকদের অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের কড়া সমালোচনা করেন।

বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জয়ী হতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের অঙ্গীকার জরুরী বলে বর্ণনা করেন তিনি।

বাইডেন বলেন, “আমরা এমন এক ভবিষ্যৎ চাই যেখানে কোনরূপ সহিংসতা বা আগ্রাসনের হুমকি ছাড়াই সকল দেশ মুক্তভাবে তাদের নিজ নিজ পথ নির্ধারণ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমরা আমাদের কাজ করবো। আমরা আপনাদের পাশে দাঁড়াবো। আমাদের যৌথ মূল্যবোধের জন্য আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো। আমরা ইতিহাসের এই নতুন মুহূর্তের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করবো। আমেরিকা আবার তার পূর্বরূপে ফিরে এসেছে।”