আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকে এমন এক ভাসমান গবেষণাগার ভাবুন, যেটি নিরন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে।
মহাকাশ স্টেশনে কর্মরত নাসার বিজ্ঞানী ব্রায়ান ড্যানসবেরি বলেন, ছয় মাসের একটি গড়পরতা

পরিকল্পনাকালে স্টেশনের মধ্যে ২৫০-৩৫০টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলতে থাকে। মহাকাশচারী-বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত স্টেশনে ৩,০০০ এর বেশি পরীক্ষা চালিয়েছেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সরঞ্জামগত সহায়তা দিয়ে থাকে, তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষার অগ্রাধিকার ঠিক করে, পঞ্জি তৈরি করে, স্টেশনে জরুরি উপকরণ সরবরাহ করে এবং পৃথিবীতে ফলাফল গ্রহণ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের এবং আন্তর্জাতিক অংশীদার দেশসমুহের মহাকাশচারীরা পরীক্ষার হাতে-কলমে অংশ সমাধা করে।
ইউরোপিয়ানদের সঙ্গে সহযোগিতা
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) অনেক সময় নাসা এবং স্টেশনের অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারের সঙ্গে যৌথভাবে স্টেশনে অনেক পরীক্ষার ব্যয় বহন করেছে। ইএসএ-এর একটি চলমান তদন্তে মাংসপেশীর দৃঢ়তায় মহাকাশযাত্রার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রকল্পটি মহাকাশে অবস্থানকালে আরোহী সদস্যদের পেশীতে জৈব-রাসায়নিক গুণাগুণ, যেমন পেশীর দৃঢ়তা, কাঠিন্য এবং স্থিতিস্থাপকতা লক্ষ্য করে।
এইসব পরীক্ষার ফলাফল মানুষের বিরামকালীন মাংসপেশীর দৃঢ়তা আরো ভালোভাবে অনুধাবনে বিজ্ঞানীদের সহায়তা করতে পারে অথবা পৃথিবী অথবা মহাশূন্যে পুনর্বাসনে নতুন চিকিৎসার পথ উন্মোচন করতে পারে।
ড্যানসবেরি বলেন, “এটি পৃথিবীতে মাংসপেশী-ক্ষয় রোগের ওপর আলো ফেলতে পারে এবং চাঁদ বা মঙ্গলগ্রহে ভবিষ্যতের দীর্ঘমেয়াদী যাত্রায় মহাকাশচারীরা কিভাবে সুস্থ ও সবল থাকতে পারবেন, সে বিষয়ে নতুন পাল্টা-পদক্ষেপ সম্পর্কে জানাতে পারে।“
নাসা বায়ো-অ্যাসটেরয়েড পরীক্ষা নামে এএসএ-এর পৃষ্টপোষকতার আরেকটি পরীক্ষায় সহায়তা দিচ্ছে, যেটিতে বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে কিভাবে পাথরের পৃষ্ঠদেশে বেড়ে ওঠা অনুজীব ধীরে ধীরে ওই পাথরকে ভেঙ্গে ফেলতে পারে এবং উপকারী খনিজ ও ধাতু তুলে আনতে পারে। অনুজীবেরা পাথর এবং নরম পাথরের উপকরণকে মাটিতে রূপান্তর করতে পারে, যা থেকে হয়তো একদিন চাঁদে গাছপালা ও খাদ্য ফলানো যাবে।

ড্যানসবেরি বলেন, “আমার কাছে এটি খুবই চিত্তাকর্ষক, কেননা আমি জানি না পৃথিবীতে [বায়ো]খননের কাজে অনুজীব কতোটা ব্যবহার হয়ে থাকে, তবে এটি অনেক ব্যাপক।“
নাসার চুক্তিতে নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সরবরাহ যান স্পেসএক্স সিআরএস-২১ এই শরতের পরে এই পরীক্ষাকে মহাকাশ স্টেশনে নিয়ে যাবে।