
যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য প্রধান গণতান্ত্রিক দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য টেকসই সুবিধা ও কল্যাণ বয়ে আনবে এমন অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে সহায়তা করবে।
গত জুন মাসে অনুষ্ঠিত সাত জাতির (জি৭) সম্মেলনে উন্নততর বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে অংশীদারিত্বের নতুন ধারণা ‘বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড (বি৩ডব্লিউ)’ তুলে ধরা হয়। যার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ৪০ ট্রিলিয়ন ডলারের অবকাঠামোগত ঘাটতি দূর করা ও কোভিড-১৯ মহামারি উত্তর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কর্মসূচি এগিয়ে নিতে সহায়তা করার বিষয়গুলো রয়েছে।
এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস পরিকল্পনাটিকে “বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ/সমন্বিত রূপকল্প” হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে যে এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে সরকারি তহবিল, উন্নয়ন সংস্থাগুলো এবং বেসরকারি খাতের শক্তিগুলো একত্রিত হবে।
“বি৩ডব্লিউ আগামী বছরগুলোতে নিম্ন- এবং মধ্যম-আয়ের দেশগুলোর জন্য হাজার হাজার কোটি ডলারের যৌথ বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করবে,” হোয়াইট হাউস বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে।
জি৭ গত জুনে শীর্ষ নেতাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলন লিডার্স সামিট শেষে এক বিবৃতিতে একথা স্বীকার করেছে যে, কোভিড-১৯ মহামারি অবকাঠামোর চাহিদাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। “যেহেতু আমাদের নেতৃবৃন্দ আমাদের সকল নাগরিকের কাছে দায়বদ্ধ, তাই আমরা সকলের অধিকতর কল্যাণে পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ,” জি৭ বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে।
জি৭ এ অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো হলো কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানী, ইটালি, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র।
মূল্যবোধ-চালিত উন্নয়ন

এই পরিকল্পনার অধীনে জি৭ এর বিভিন্ন সদস্য দেশগুলো বিভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানে ও অংশীদারিত্বে প্রকল্পগুলোতে সহায়তা করবে যার মাধ্যমে জলবায়ু, স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং লৈঙ্গিক সাম্য ও সমতা বিষয়গুলো সমাধানে কাজ করা হবে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন, যিনি জি৭ সম্মেলনে অবকাঠামো অংশীদারিত্বের প্রস্তাব করেছেন, তিনি বলেছেন যে, বি৩ডব্লিউ পরিবেশগতভাবে টেকসই অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে সহায়তা করবে যেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিফলিত হবে। এই কর্মসূচির পরিচালনা নীতি অনুযায়ী উপযুক্ত প্রকল্পগুলো হবে, যেখানে:
- নির্মাণ, স্বচ্ছতা ও অর্থায়নের উচ্চমান অনুসরণ করা হবে এবং শ্রম ও পরিবেশের জন্য সুরক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
- বিনিয়োগ এমনভাবে করা হবে যা প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্যগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
- প্রকৃত চাহিদা পূরণ বা মোকাবেলা করার লক্ষ্যে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে পরামর্শের ভিত্তিতে শক্তিশালী অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য প্রধান গণতান্ত্রিক দেশগুলো বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে উন্নয়ন অর্থনীতির হাতিয়ারগুলোকেও শক্তিশালী করতে চায় যা উচ্চমানকে অনুসরণ করবে এবং অধিকতর ভালো ফলাফলের দিকে পরিচালিত করবে এবং তাদের প্রভাব বাড়ানোর জন্য বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলো ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করবে।
জি৭-এ দেয়া বক্তৃতায় বাইডেন বি৩ডব্লিউ সম্পর্কে বলেছেন যে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের তুলনায় এটি “বিশ্বব্যাপী দেশগুলোর চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে অনেক বেশি ন্যায়সঙ্গত উপায়” কারণ চীনের উদ্যোগটি কিছু দেশের পরিবেশগত ক্ষতি এবং অস্থিতিশীল/টেকসইবিহীন ঋণের কারণ হবে।
“আমরা বিশ্বাস করি যে (বি৩ডব্লিউ) শুধু দেশের জন্য ভালো হবে না, এটি সমগ্র বিশ্বের জন্য ভালো হবে,” উল্লেখ করে বাইডেন আরো বলেন যে, “(এই বিনিয়োগগুলো) এমন মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করবে যা আমাদের গণতন্ত্রের মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে এবং মূল্যবোধহীন স্বৈরতন্ত্রকে নয়।”