আপনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অধীনে কর্র্মরত হলে আপনার প্রার্থীদের সম্পর্কে অবসর সময়ে টুইট করুন

ডাক বিভাগের এক কর্মচারী অফিস চলাকালীন সময়ে তার টুইটার প্রোফাইলে পছন্দনীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ছবি দিয়ে টুইট করেন। কৃষি বিভাগের একজন কর্মচারী ফেসবুকে রাজনৈতিক দলের তহবিল সংগ্রহের অনুরোধ দেখে তাতে “লাইক” বাটন ক্লিক করেন। এই ব্যক্তিরা জেনে কিংবা না জেনে যুক্তরাষ্ট্রের আইন ভঙ্গ করেছেন।

রাজনীতি নিয়ে প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত রয়েছে এবং একটি মুক্ত সমাজে প্রত্যেকেই তার মতামত প্রকাশের ব্যাপারে স্বাধীন এবং তারা তাদের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার জন্য কাজ করতে পারেন। তবে যারা যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কাজে নিয়োজিত তাদের জন্য বিষয়টি একটু জটিল!

যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৩৯ সালে প্রণীত হ্যাচ অ্যাক্ট যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্বাহী বিভাগে কর্মরত প্রায় ৪০ লাখ ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য। এই আইনে একজন ফেডারেল কর্মকর্তা-কর্মচারী তার পছন্দের রাজনৈতিক দল কিংবা নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার ক্ষেত্রে কী করতে পারবেন এবং কী করতে পারবেন না সেটা নির্ধারণ করে দেয়া আছে।

নিম্নে হ্যাচ অ্যাক্টে উল্লেখিত একজন ফেডারেল কর্মকর্তা-কর্মচারী কোন ধরনের কাজগুলো করতে পারবেন না তার কয়েকটি উল্লেখ করা হলো:

  • তার সরকারি কর্তৃত্ব ব্যবহার করে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা।
  • তাদের দপ্তরের সাথে কর্মসূত্রে সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন কারো রাজনৈতিক কর্মকান্ডে তার পক্ষে কাজ করা কিংবা তাকে নিরুত্‌সাহিত করা।
  • রাজনৈতিক অনুদানের জন্য আবেদন কিংবা অনুরোধ করা।
  • দলীয় নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ।
  • দায়িত্ব-পালনরত অবস্থায়, সরকারি পরিচয় প্রদর্শনের সময়, কর্মক্ষেত্রে কিংবা সরকারি গাড়িতে থাকাকালীন সময়ে রাজনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্বাধীন সংস্থা ইউ.এস. অফিস অফ স্পেশাল কাউন্সেল হ্যাচ অ্যাক্ট বাস্তবায়ন করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তারা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাদের কোন ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলো বেআইনী হিসেবে বিবেচিত হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। সংস্থাটি প্রতি বছর ১,০০০ এরও বেশি পরামর্শমূলক মতামত প্রকাশ করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রত্যাশিত আচরণ বিষয়ক নির্দেশনাগুলো হালনাগাদ করা হয়েছে।

হ্যাচ অ্যাক্ট সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রের বাইরে তাদের রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করতে, (পছন্দের প্রার্থীকে) ভোট দিতে কিংবা এমনকি ভোটারদের নিবন্ধন কাজে সহায়তা করতে বাধা দেয় না।

এই আইন যা করে তা হলো সরকারি কাজে নিয়োজিত জনশক্তিকে রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ রাখে। এই আইন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনৈতিক নিপীড়ন বা জোরজবরদস্তি থেকে সুরক্ষা দেয়। উদাহরণস্বরূপ, কোন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে প্রচার কাজে অংশ নিতে অস্বীকার করায় কিংবা কোন একটি রাজনৈতিক দলের তহবিলে অর্থ প্রদান করলে কিংবা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলে তার জন্য তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যাবে না, কিংবা তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা যাবে না বা তার প্রতি কোন ধরনের বৈষম্য করা যাবে না।

এই আইনের একটি ধারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিযুক্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দেয়। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত উপদেষ্টা এবং কেবিনেট সেক্রেটারিদের (মন্ত্রী) মতো ব্যক্তিরা তাদের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ চালিয়ে যেতে পারেন।

হ্যাচ অ্যাক্টের আওতাভুক্ত কোন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি এই আইন লঙ্ঘন করেন তাহলে তার ক্ষেত্রে তিরস্কার থেকে চাকরি হারানো পর্যন্ত শাস্তি হতে পারে এবং এই আইনে পাঁচ বছর পর্যন্ত সরকারি কাজ থেকে বিরত থাকার শাস্তির বিধান পর্যন্ত রয়েছে।