
জাতিসংঘ বলেছে, কোভিড-১৯ টিকা সমভাবে বণ্টন বিশ্বের সামনে ‘সবচেয়ে বড় নৈতিক পরীক্ষা’। তবে প্রত্যন্ত জনপদে টিকার ডোজ পৌঁছে দেওয়া এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
জিপলাইন এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে ড্রোন ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্রের এ কোম্পানিটির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রোবোটিক উড়োজাহাজ ইতিমধ্যে বিভিন্ন উৎপাদকের কাছ থেকে ঘানায় ২ লাখ ২০ হাজার কোভিড-১৯ টিকার ডোজ সরবরাহ করেছে।
ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট ৮ ডিসেম্বর জিপলাইন এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদক ত্রি-এম সিঙ্গাপুরকে অ্যাওয়ার্ড ফর করপোরেট এক্সেলেন্সে (এসিই) ভূষিত করেছে। এসিই বিজয়ীরা বিদেশের মাটিতে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে দৃষ্টান্তমূলক চর্চার স্বাক্ষর রেখে থাকে। এই দুটি কোম্পানি স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ক্যাটেগরিতে বিজয়ী হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া-ভিত্তিক জিপলাইন এবং মিনেসোটার সেইন্ট পলভিত্তিক থ্রি-এম উভয়ই কোভিড-১৯ অতিমারির সময় জরুরি পণ্য ও সেবার সরবরাহ শেকল অক্ষত রাখতে কাজ করেছে।

স্পর্শকাতর টিকার দুরুহ সরবরাহ
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত জিপলাইন দু বছর পরেই রুয়ান্ডায় জরুরি পরিসঞ্চালনের জন্য রক্ত সরবরাহ করে ড্রোন ব্যবহার করে। তবে কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবেলায় স্পর্শকতার মেসেঞ্জার আরএনএ টিকা তৈরি এবং ১.২ বিলিয়ন কোভিড-১৯ টিকা নিম্ন ও মধ্যম-আয়ের দেশগুলোয় বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার এ নতুন টিকা সরবরাহকারীর জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় যদিও দেখা গেছে উপসর্গযুক্ত কোভিড-১৯ প্রতিরোধে এমআরএনএ টিকা ৯৫% কার্যকর, এ সেরাম অতিনিম্ন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়।
জিপলাইন এ চ্যালেঞ্জ পূরন করেছে। এটি এমআরএনএ টিকা উৎপাদক ফাইজার-বায়োএনটেকের সঙ্গে এমন এক অংশিদারিত্ব তৈরি করেছে, যা ঘানায় ৫০ হাজার কোভিড-১৯ টিকা সরবরাহ সম্ভব করেছে।
ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ২৭ কোটি ৫০ লাখের বেশি কোভিড-১৯ টিকার ডোজ সরবরাহ করেছে ১১০টির বেশি দেশে। টিকা সরবরাহকে আরো বেগবান করতে এবং টিকাদান কেন্দ্রগুলোকে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানি তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র বেশিরভাগ কোভিড-১৯ টিকার অনুদান দিয়েছে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে, যেটি কোভিড-১৯ টিকার সমতাভিত্তিক বণ্টনে নিয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক অংশিদারিত্ব। জিপলাইন কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ঘানার বঞ্চিত জনপদগুলোয় ২৬ হাজারের বেশি টিকা, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী এবং কোভিড-১৯ টেস্ট কিট সরবরাহ করেছে।
থ্রি-এম মাস্ক কর্মীদের সুরক্ষা দিয়েছে
থ্রি-এম বিশ্বজুড়ে তাদের এন৯৫ মাস্কের উৎপাদন ২০১৯ সালের চেয়ে তিন গুণ করেছে ২০২০ সালে। এটি এখণ বছরে ২.৫ বিলিয়ন মাস্ক উৎপাদন করে। এর বাইরে চিকিৎসা কর্মীদের জন্য এন৯৫ মাস্কের ফিট-টেস্ট করা এবং মাস্ক যাতে সম্মুখসারির কর্মীদের সঠিকভাবে সুরক্ষা দেয় তা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষকদের ছাড়পত্র দিতে বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে অংশিদারিত্ব তৈরি করে থাকে থ্রি-এম।
এ কোম্পানি প্রথম এন৯৫ মাস্ক তৈরি করেছিল ১৯৯০ এর দশকে। তাইওয়ানি আমেরিকান বিজ্ঞানী পিটার সাইয়ের উদ্ভাবিত বিদ্যুতায়িত সূতা ব্যবহার করে এ মাস্কের ডিজাইন করা হয়।
চিকিৎসা সরঞ্জামের নকল প্রতিরোধে সিঙ্গাপুর সরকারের সঙ্গে অংশিদারিত্ব তৈরি করেছে থ্রি-এম। প্রতারণার অভিযোগ গ্রহণের জন্য হটলাইন চালুর মাধ্যমে থ্রি-এম ৫৫.৪ মিলিয়নের বেশি নকল এন৯৫ মাস্ক জব্দ করা এবং ২৮ হাজারের বেশি প্রতারণামূলক অনলাইন বিক্রির বিজ্ঞাপন অপসারণে ভূমিকা রেখেছে।
জলবায়ু উদ্ভাবন ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ক্যাটেগরিতে ২০২১ সালের সেক্রেটারিজ অ্যাওয়ার্ড ফর করপোরেট এক্সেলেন্স জয়ী কোম্পানিগুলো সম্পর্কে আরও জানুন।