যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকারের নায়ক ও জনপ্রতিনিধি জন লুইস গত ১৭ জুলাই ৮০ বছর বয়সে মারা যান। গত ডিসেম্বরে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকে তিনি এই রোগের সাথে লড়াই করে আসছিলেন।
আলাবামার বর্গাচাষীপুত্র লুইস যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তি ছিলেন। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদী নেতা লুইস পরবর্তীকালে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া রাজ্য থেকে প্রতিনিধি পরিষদ নির্বাচনে জয় লাভ করেন এবং ১৯৮৭ সাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
স্টুডেন্ট ননভায়োলেন্ট কোঅর্ডিনেটিং কমিটি (এসএনসিসি)-এর পরিচালক ২৩ বছর বয়সী লুইস ছিলেন মানবাধিকার যুগের বিগ সিক্স নামে খ্যাত ছয়টি জাতীয় মানবাধিকার সংস্থার ছয় প্রতিনিধির মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ।
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র’র নেতৃত্বে বিগ সিক্স খ্যাত এই ছয় নেতা ১৯৬৩ সালে কর্মসংস্থান ও স্বাধীনতার দাবীতে ওয়াশিংটন পদযাত্রা’র আয়োজন করেন যেখানে হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে সমবেত হন। কিং’র বিখ্যাত সেই “আই হ্যাভ এ ড্রিম” বক্তৃতার ঠিক আগেই লুইস জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।

লুইস ১৯৬৫ সালের ৭ মার্চ আলাবামার সেলমায় অবস্থিত এডমান্ড পেটাস সেতুর সন্নিকটে “ব্লাডি সানডে” পদযাত্রারও নেতৃত্ব দেন যেখানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা করা হয় এতে লুইসের মাথা ফেটে যায়।
মানবাধিকার আন্দোলনকালে কীভাবে এর মোড় ঘুরে গিয়েছিলো সে প্রসঙ্গে স্মৃতিচারণায় লুইস তাঁর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেছেন, “সেলমার সেই দিনটি যে গভীর সাহসের সঞ্চার করেছিলো তা আগে কখনো আসেনি।”
কংগ্রেসে ৩৩ বছরের মেয়াদকালে লুইস সবার জন্য সমতা, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার পক্ষে নিরন্তর সংগ্রাম করে গেছেন। ২০১১ সালে তিনি প্রেসিডেন্সিয়াল মেডাল অফ ফ্রিডম পদকে ভূষিত হন।
গত ৪ জুন লুইস তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা সবাই এক এবং একই পরিবারের মানুষ। সবাই আমরা একই গৃহের বাসিন্দা – এ গৃহ শুধু আমেরিকার নয়, এ এক বিশ্বগৃহ।”