বিশ্বজুড়ে নেতৃত্বদানকারীদের সঙ্গে অর্থবহ মত বিনিময়ের সুযোগ

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রামের সাবেক অংশগ্রহণকারীরা জুলাই মাসে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে পরস্পরের সঙ্গে নতুন করে মিলিত হন (পররাষ্ট্র দপ্তর)

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তরের ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রাম (আইভিএলপি) যুক্তরাষ্ট্র ও সারা বিশ্বের উদীয়মান নেতাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপন করছে।

 ফেসেস অব এক্সচেঞ্জ নামে এই উদযাপনে আশিজন সাবেক অংশগ্রহণকারীকে তুলে ধরা হবে। এদের মধ্যে কেউ কেউ আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত । কেউবা নিজের এলাকার মানুষের জন্য স্থানীয়ভাবে কাজ করছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তর আইভিএলপির বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ২০২০ সাল জুড়ে এই প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাহিনি তুলে ধরেছে। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ৯ ডিসেম্বর এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। এ দিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটরসের পরিচালক অ্যান গ্রাইমস বলেন, আইভিএলপির মূল চেতনাটি হচ্ছে সম্পর্ক গড়ে তোলার। আমেরিকার একটি একান্ত ঘনিষ্ঠ ছবি তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য।

১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত আইভিএলপি সারা বিশ্বের উদীয়মান নেতাদের যুক্তরাষ্ট্র এবং এর সমাজ ও প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে জানতে দেশটি সফর করার সুযোগ করে দেয়। প্রথম আইভিএলপি সদস্য ছিলেন ইকুয়েডরের ফাদার অরেলিও এস্পিনোসা। কর্মসূচিটির আগের নাম হেমিস্ফিয়ার লিডারস প্রোগ্রাম এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসেছিলেন তিনি। তখন থেকে এই কর্মসূচি ২ লাখ ২৫ হাজারের বেশি এক্সচেঞ্জ ভিজিটের আয়োজন করেছে। এর মধ্যে বেশ কিছুসংখ্যক আইভিএলপি অ্যালামনাই রাজনীতিতে উচ্চপদে আসীন হয়েছেন। ৫০০ জনের বেশি অ্যালামনাই বর্তমান বা সাবেক সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান।

মার্গারেট থ্যাচার এবং হেনরি কিসিঞ্জার দালানের ছাদ থেকে ওয়াশিংটন স্মৃতিস্তম্ভকে দেখচ্ছেন (© বব ডগের্টি / এপি ইমেজেস)
১৯৭৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠকের সময় যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার (ডানে) (© বব ডহার্টি/এপি ইমেজেস)

সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার ১৯৬৭ সালে আইভিএলপিতে অংশ নিয়েছিলেন। কয়েক দশক পরে, ১৯৯০ সালে তিনি দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট (ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন-অফিস) থেকে পাঠানো এক নোটে লেখেন: ওই সফরটি ছিল অত্যন্ত মূল্যবান। আমি আমেরিকান জীবনযাত্রার প্রাণশক্তি এবং উদারতা দেখেছি ও অনুভব করেছিলাম। আমার মনের ওপর অমোচনীয় ছাপ ফেলেছিল তা। চিরদিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু থাকবো আমি ।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস (১৯৭৮ সাল) এবং নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন (২০১২ সাল) আইভিএলপিতে অংশ নিয়েছিলেন। তারা বর্তমানে তাদের পদে থেকে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছেন। 

পিটার মাসিকা তানজানিয়া ইয়ুথ অ্যালায়েন্স (টিএওয়াইওএ) এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। তিনি ২০০৩ সাল এর আইভিএলপি প্রাক্তনী। আইভিএলপি-তে অংশ নেওয়ার পরে মাসিকা তানজানিয়ায় এইচআইভির বিস্তার প্রতিরোধ করতে সেবা ব্যবস্থা চালু করেন। তার কার্যক্রমের মধ্যে ছিল চিকিৎসা বিষয়ক তথ্য প্রচার এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা গড়ে তোলা। মাসিকার প্রতিষ্ঠান টিএওয়াইওএ এখন সমতার বিষয়টিকে এগিয়ে নেওয়া এবং তানজানিয়ার যুবকদের আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য বিভিন্ন আউটরিচ কর্মসূচি চালায়। 

মাসিকা বলেন, আমাদের (তানজানীয়দের) কেবল রাজনীতি নয়, ব্যবসাসহ সবক্ষেত্রে নেতৃত্বের প্রয়োজন

একদল লোক ছবির জন্য একত্রিত হয়ে দাঁড়িয়েছে (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)
সহকারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরি রয়েস কূটনীতিক সম্প্রদায়কে জানুয়ারিতে ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব আমেরিকান ডিপ্লোমাসি’তে ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রামের ৮০ তম বার্ষিকী উদযাপনের উদ্বোধনীতে স্বাগত জানান। (পররাষ্ট্র দপ্তর)