জো বাইডেন: আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট

সামনে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাশোভিত মঞ্চে তর্জনি তাক করে আছেন জো বাইডেন। (© অ্যান্ড্রু হ্যারনিক/এপি ইমেজেস)
ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে বিজয় ভাষণ দেয়ার পর নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (© অ্যান্ড্রু হ্যারনিক/এপি ইমেজেস)

কার্য সমাধার প্রয়োজনে বিভিন্ন রাজনৈতিক পন্থা অবলম্বনের জন্য পরিচিত প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্যাপিটল হিলের দীর্ঘদিনের আইনপ্রণেতা জোসেফ আর. বাইডেন জুনিয়র আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে কার্যভার গ্রহণ করবেন।

বাইডেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা’র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে আট বছর কাজ করেছেন এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করেন।

বিজয় অর্জনের জন্য বাইডেন ৩০৬টি ইলেক্টোরাল ভোট নিশ্চিত করেন – যেখানে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ের জন্য ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট প্রয়োজন হয় – এবং ৮১ মিলিয়ন ভোট পেয়েছেন যা আমেরিকার ইতিহাসে অন্য যেকোন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর চেয়ে বেশী।

গত ৭ ডিসেম্বরে দেয়া বিজয় ভাষণে বাইডেন বলেন, “আসলে স্বীকার করতেই হবে যে, এই ফল আমাকে চমকে দিয়েছে। আজ রাতে পুরো দেশে, সারা দেশে সকল নগরীর সমস্ত অংশে, এমনকি সারা পৃথিবী জুড়ে মানুষের মধ্যে আশার বাঁধভাঙা আনন্দ দেখেছি, আগামী দিনের প্রত্যাশায় ভালো দিন আনার নতুন প্রত্যয় দেখেছি। আর আমার ওপর আপনারা যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন সে জন্য আমি অভিভূত।”

বাইডেন নিয়ে এলেন বৈদেশিক নীতিমালা বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা

হাস্যোজ্জ্বল জো বাইডেন, পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা
জো বাইডেন- ১৯৭২ সালে ডেলাওয়ার থেকে ডেমোক্র্যাটিক দলের নবনির্বাচিত সিনেটর। (© এপি ইমেজেস)

পেনসিলভানিয়ার স্যাক্র্যান্টনে জন্ম নেয়া এবং ডেলাওয়ারে বেড়ে ওঠা বাইডেন ক্যাপিটল হিলে কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা নিয়ে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেন। সিনেটর হিসাবে ৩৬ বছর ধরে তিনি ডেলাওয়ারের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিমালা পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১২ বছর যাবত সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির সভাপতি বা র‌্যাঙ্কিং মেম্বার হিসাবে বাইডেন সন্ত্রাসবাদ, গণবিধ্বংসী অস্ত্র, কোল্ড ওয়ার পরবর্তী ইউরোপ, মধ্য প্রাচ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যা ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রণয়ণের অগ্রভাগে ছিলেন।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে বাইডেন বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং ৫০টিরও বেশী দেশে প্রায় ২০ লক্ষ কিলোমিটার ভ্রমণ করেছেন।

তিনি হোয়াইট হাউসে ওবামা’র ক্যাবিনেটে সেশন পরিচালনা করেন এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ের সাথে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আমেরিকানদের জীবনমান উন্নয়ন, বন্দুক সহিংসতা হ্রাস এবং নারীর প্রতি সহিংসতা নিরসন বিষয়ে আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেন এবং কংগ্রেসের সাথে কাজ করেন।

৭৮ বছর বয়সী বাইডেন হবেন অফিসের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের অভিষেক কালে তাঁর বয়স ছিলো ৭০। (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান যখন কার্যভার ত্যাগ করেন তখন তাঁর বয়স ছিলো ৭৭ বছর।)

বাইডেন তাঁর প্রশাসনের প্রথম অংশে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং বিভিন্ন জরুরী সমস্যা, যেমন কোভিড-১৯ মহামারী, ভালো বেতনের কাজ, জাতিগত অবিচার এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে মনোনিবেশ করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।

বাইডেন তাঁর বিজয় ভাষণে বলেন, “আসুন আমরা সেই জাতিতে পরিণত হই- আমরা জানি আমরা সেটা পারবো। ঐক্যবদ্ধ এক জাতি, শক্তিশালী এক জাতি, সুস্থ-সবল এক জাতি- যুক্তরাষ্ট্র। ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, এমন কিছু নেই, কখনোই এমন কিছু ছিলো না যা আমরা চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি।”