কামালা দেবী হ্যারিস, একজন সিনেটর হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে মার্কিন কংগ্রেসে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিনিধিত্ব করছেন, ২০ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ অলংকৃত করার মধ্য দিয়ে উচ্চতর দায়িত্ব পালন শুরু করবেন।
আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি হবেন প্রথম নারী এবং আফ্রিকান, জ্যামাইকান ও দক্ষিণ এশীয় প্রথম ব্যক্তি।
“যদিও আমি এই পদে প্রথম নারী হতে পারি, তবে আমিই শেষ নারী নই — কারণ আজ রাতে প্রতিটি ছোট মেয়েশিশু দেখতে পাচ্ছে যে এটি একটি সম্ভাবনার দেশ,” হ্যারিস ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর বলেছেন।
শুরুর বছরগুলো
একজন অভিবাসীর সন্তান কামালা হ্যারিস ১৯৬৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা

ডোনাল্ড হ্যারিস জ্যামাইকা থেকে এসেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ। (তার সঙ্গে তার স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল। তখন তাদের দুই মেয়ে ছোট ছিল।)
হ্যারিস বলেন তিনি আমেরিকার প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাসী হয়ে বড় হয়েছেন। তার মা ভারত থেকে আগত শ্যামলা গোপালান হ্যারিস ছিলেন একজন নাগরিক অধিকার আন্দোলন কর্মী ও স্তন ক্যান্সার গবেষক, যিনি তার সন্তানদের বলতেন: “বসে বসে শুধু অভিযোগ না করে নিজে একটা কিছু কর।” হ্যারিসের মা ২০০৯ সালে মারা যান।
হ্যারিস ওয়াশিংটনের ঐতিহাসিক কৃষ্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হাওয়ার্ড থেকে তার স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির হ্যাস্টিংস ল’ কলেজ থেকে আইন ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
তিনি বেশ কয়েক বছর ওকল্যান্ডে ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করেছেন এবং ২০০৩ সালে সান ফ্রান্সিসকো শহর ও কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির দায়িত্ব লাভ করেন।
হ্যারিস হলেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী যিনি ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের পরেই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিচার বিভাগ ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন।
হ্যারিস ২০১৪ সালে অ্যাটর্নি ডগলাস এমহফকে বিয়ে করার মধ্য দিয়ে তার সন্তানদের সত্ মা হন, যারা এখন তরুণ বয়সী। (এমহফ, যিনি ভাইস প্রেসিডেন্টের স্বামী হিসেবে “সেকেন্ড জেন্টেলম্যান” এর ভূমিকা গ্রহণ করবেন, তিনি এই মাসে জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি ল’ সেন্টারের অনুষদে যোগদান করবেন।)
সিনেটর হিসেবে হ্যারিস সিনেটের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং সরকার বিষয়ক কমিটি, ইন্টেলিজেন্স সিলেক্ট কমিটি, বিচার বিভাগীয় কমিটি এবং বাজেট কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বলেছেন যে, ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার কাজের অগ্রাধিকার হলো নির্বাচিত-প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে কোভিড-১৯ মহামারি অবসান, অর্থনৈতিক সুযোগ ও স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ, জলবায়ু পরিবর্তনের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা, সন্ত্রাসবাদ ও পদ্ধতিগত বর্ণবাদ মোকাবেলায় সহযোগিতা করা এবং (পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট) যৌথ উদ্বেগের বিষয়গুলো নিয়ে আন্তর্জাতিক মিত্রদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা।
বাইডেন ২০২০ সালে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে হ্যারিসকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় বলেছিলেন: “আমি আমার পাশে একজন মহান ভাইস প্রেসিডেন্টকে পেতে যাচ্ছি।”