যুক্তরাষ্ট্রের নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে হেপাটাইটিস সি আবিষ্কারক বিজ্ঞানীরাও রয়েছেন

সোনালী রেখায় আঁকা দাঁড়িওয়ালা মানুষের ছবি (© শাটারস্টক)
(© শাটারস্টক)

হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিষ্কারে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের অবদানের ফলে নতুন পরীক্ষা ও চিকিত্‌সার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। গত ৫ অক্টোবর, দুই আমেরিকান বিজ্ঞানী এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের নিরলস প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ২০২০ সালের জন্য চিকিত্‌সা বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন।

আমেরিকান হার্ভে জে. অল্টার এবং চার্লস এম. রাইসের সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারের কারণ হেপাটাইটিস সি ভাইরাস শনাক্ত করার প্রচেষ্টার কারণে  এই রোগ শনাক্তে নতুন রক্ত পরীক্ষা ও চিকিত্‌সার অনুমতি দেয়া হয়েছে। রাইস ও অল্টার তাদের পুরস্কার ভাগ করে নেবেন আরো একজন বিজ্ঞানীর সঙ্গে। তিনি হলেন যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও বর্তমানে কানাডাতে কর্মরত বিজ্ঞানী মাইকেল হটন।

তাদের প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ। তাদের আবিষ্কৃত নতুন রক্ত পরীক্ষা রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া বিশ্বের অনেক দেশে কার্যকরভাবে বন্ধ করতে পারায়, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নতি সাধন হয়েছে।

“নোবেল বিজয়ীদের হেপাটাইসিস সি ভাইরাসের আবিষ্কার ভাইরাসজনিত রোগের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে একটি যুগান্তকারী অর্জন।” উল্লেখ করে নোবেল অ্যাসেম্বলি বলেছে, “ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, এই রোগটি এখন নিরাময় করা যায় এবং এর ফলে বিশ্ব থেকে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস নির্মূলের আশা বেড়েছে।”

হেপাটাইটিস সি মোকাবেলায় গবেষকদের অবদান রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চিকিত্‌সা গবেষণা ও সাফল্যের ক্ষেত্রে আমেরিকা নেতৃত্বের প্রতীক। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে রেকর্ড সময়ে বিশ্বের মানুষের কাছে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে

নোবেল পুরস্কার ১৯০১ সালে চিকিত্‌সা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য এবং শান্তিতে অসামান্য অর্জনকে স্বীকৃতি দিতে প্রথম দেয়া হয়। পরবর্তীতে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে ১৯৬৮ সাল থেকে অর্থনৈতিক বিজ্ঞানের পুরস্কারটি প্রবর্তন করে।

এই বছর নোবেল বিজয়ী ১২ জনের মধ্যে সাত জন যুক্তরাষ্ট্রের।

ছয়টি বিভাগে এই বছরের নোবেল বিজয়ীরা হলেন:

চিকিত্‌সা

হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিষ্কারের জন্য”:

  • হার্ভে জে. অল্টার, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ, বেথেসদা, মেরিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র
  • মাইকেল হটন, আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়, এডমন্টন, কানাডা।
  • চালর্স এম. রাইস, রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়, নিউ ইর্য়ক, যুক্তরাষ্ট্র

পদার্থবিজ্ঞান

কৃষ্ণ গহ্বর গঠন নিয়ে আবিষ্কার; যেখানে তিনি জানিয়েছেন যে, আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বই কৃষ্ণ গহ্বর গঠনে ভূমিকা রেখেছে”:

  • রজার পেনরোজ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড, যুক্তরাজ্য।

আমাদের গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের কেন্দ্রে একটি ভারী ধরনের বস্তু (সুপারম্যাসিভ কমপ্যাক্ট অবজেক্টিভ) আবিষ্কারের জন্য”:

  • রাইনহার্ড গেনজেল, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং ম্যাক্স প্লাংক ইন্সটিটিউট ফর অ্যাক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ফিজিক্স, গার্চিং, জার্মানি।
  • আন্দ্রেয়া গেজ, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

রসায়ন

জিন সম্পাদনার একটি পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য”:

  • ইমানুয়েল শারপঁসিয়ে, সায়েন্স অব প্যাথোজেনে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইউনিট, বার্লিন, জার্মানি।
  • জেনিফার এ. ডাউডনা, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।

সাহিত্য

তাঁর সুস্পষ্ট কাব্যভাষ্য ও দার্শনিক সৌন্দর্যবোধ ব্যক্তি সত্তাকে সার্বজনীন করে তোলে”:

  • লুইস গ্ল্যুক, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোজেনক্র্যাঞ্চ রাইটার ইন রেসিডেন্স, নিউ হ্যাভেন, কানেক্টিকাট, যুক্তরাষ্ট্র।

শান্তি

সংস্থার ক্ষুধা মোকাবেলার প্রচেষ্টা, সংঘাতে-ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে শান্তির লক্ষ্যে অবস্থার উন্নতির জন্য অবদান রাখা এবং যুদ্ধ ও সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে ক্ষুধাকে ব্যবহার রোধের প্রচেষ্টায় চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করার জন্য”:

  • বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি), জাতিসংঘ।

অর্থনৈতিক বিজ্ঞান

নিলাম তত্ত্বের উন্নতি এবং নিলামের নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবন”:

  • পল আর. মিলগ্রোম, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যানফোর্ড, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।
  • রবার্ট বি. উইলসন, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যানফোর্ড, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।