যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা মহাকাশ অনুসন্ধানে সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছে

ভবিষ্যতের মহাকাশ অনুসন্ধান শান্তিপূর্ণ, টেকসই ও সকলের জন্য কল্যাণকর হওয়ার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র ও এর আন্তর্জাতিক অংশীদারগণ নিশ্চিত করেছে।

গত ১৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য সাতটি দেশ নাসার আর্টেমিস মহাকাশ কর্মসূচি পরিচালনার কৌশলগত নীতিমালা আর্টেমিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। নাসার আর্টেমিস কর্মসূচির লক্ষ্য হলো ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদে প্রথমে নারী ও পরে পুরুষ পাঠানো। এছাড়াও এই কর্মসূচির মাধ্যমে নাসার কর্মকর্তারা মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর ব্যাপারেও আশাবাদী।

নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জিম ব্রাইডেনস্টাইন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, “আর্টেমিস হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিসরের ও সর্বাধিক বৈচিত্র্যময় আন্তর্জাতিক মানব মহাকাশ অনুসন্ধান কর্মসূচি এবং আর্টেমিস চুক্তির মাধ্যমে একটি একক বৈশ্বিক জোট প্রতিষ্ঠিত হবে।”

আর্টেমিস চুক্তি প্রস্তুতকালে মহাকাশের উপর কোন দেশের সার্বভৌমত্ব দাবী প্রতিরোধে ১৯৬৭ সালে প্রণীত আউটার স্পেস ট্রিটির নীতিমালা এবং মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রিক পূর্ববর্তী সকল চুক্তিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল।

আর্টেমিস চুক্তির অধীনে এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো সম্মত হয়েছে যে, চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহের অনুসন্ধান কার্যক্রম শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত। চুক্তিতে স্বাক্ষরকারীদের প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে রয়েছে দুর্ভোগে আক্রান্ত কর্মীদের জরুরি সহায়তা প্রদান, মহাকাশের সকল বস্তুর তালিকা তৈরি করা, বর্জ্যের বা ধ্বংসাবশেষের নিরাপদ ব্যবস্থাপনা, এবং বৈজ্ঞানিক তথ্য সবার জন্য প্রকাশ করা।

চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী প্রথম আটটি দেশ হলো অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইতালি, জাপান, লুক্সেমবার্গ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র। আরও দেশ এই চুক্তিতে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র আর্টেমিসের নেতৃত্ব দিলেও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতেই ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানগুলো পরিচালিত হবে। এছাড়াও নাসার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, এই অংশীদারিত্ব পৃথিবীতেও ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

মহাকাশ গবেষণায় যৌথভাবে সহযোগিতার এই অঙ্গীকারের সূচনা হয়েছিল ২০১৯ সালে, নাসার ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে অ্যাপোলো ১১ নভোযানে চড়ে প্রথম চাঁদে মানুষ অবতরণের ৫০তম বার্ষিকী পালনের পরে। অ্যাপোলোর মহাকাশ গবেষণা কর্মসূচির মাধ্যমে মানব কল্যাণে এখন খুবই কাজে লাগছে এমন অনেক ধরনের প্রযুক্তি তৈরি হয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে সিটি স্ক্যান, কমপিউটার মাইক্রোচিপস, কর্ডলেস যন্ত্রপাতি এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশন।

“আর্টেমিস চুক্তি মূলত মহাকাশ ও পৃথিবীতে পারস্পরিক বোঝাপড়া জোরদার করা ও ভুল ধারণা কমানোর মাধ্যমে সংঘাত এড়াতে সহায়তা করবে,” উল্লেখ করে নাসার আন্তর্জাতিক ও আন্তঃএজেন্সি সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সহযোগী প্রশাসক মাইক গোল্ড বলেন, “আর্টেমিস চুক্তি চাঁদে যাত্রার জন্য হলেও এই চুক্তির গন্তব্য হলো একটি শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যত।”