কম্পিউটারে বসা ব্যক্তিকে ঘিরে সামরিক পোষাক পরা ব্যক্তিরা (ইউএস নেভি/ গণযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, ১ম শ্রেণী, স্যামুয়েল সৌভ্যানাসন)
ম্যালওয়্যার ও নেটওয়ার্কের হামলা সনাক্তকরণে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার কমান্ড’র সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞগণ অন্যান্য দেশের সাথে কাজ করছেন। (ইউএস নেভি/ গণযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, ১ম শ্রেণী, স্যামুয়েল সৌভ্যানাসন)

সাইবার আক্রমণের ফলে নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ে। স্বাগতিক দেশগুলোর সাথে কাজের মাধ্যমে ২০১৮ সাল থেকে সাইবার কমান্ড ৪০টিরও বেশী ম্যালওয়্যারের নমুনা সনাক্ত করেছে।

সাইবার হামলা ও অসত্য তথ্যের প্রচারণার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সর্বোত্তম পন্থা হলো হামলায় ব্যবহৃত হাতিয়ারগুলোকে প্রকাশ করে দেয়া। কোন হামলা সনাক্ত হলে কর্মকর্তারা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত একটি সাইট, ভাইরাস টোটালে উক্ত ম্যালওয়্যারটিকে উন্মুক্ত করা। এই সাইটটি একটি অনলাইন গোষ্ঠী যেখানে অন্যদের সনাক্তকৃত সন্দেহজনক ফাইল পরীক্ষা ও ম্যালওয়্যার আদান-প্রদানের অনুমতি রয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ নেটওয়ার্ক ও প্ল্যাটফর্মগুলোতে মারাত্মক সাইবার হামলা প্রতিরোধে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে মন্টেনেগ্রোর সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার বিশেষজ্ঞগণ কাজ করেছেন।

কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে বসে দু’জন ব্যক্তি কাজ করছেন (ইউএস আর্মি/বিশেষজ্ঞ ক্রেইগ জেনসেন)
মন্টেনেগ্রোর পডগোরিকায় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার কমান্ডের একজন বৈমানিক এবং মন্টেনেগ্রোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন সদস্য পরীক্ষামূলক সাইবার হুমকি বিষয়ক তথ্যাদি পর্যালোচনা করছেন। (ইউএস আর্মি/বিশেষজ্ঞ ক্রেইগ জেনসেন)

২০১৯ সালের অক্টোবরে পডগোরিকা সফরে সেক্রেটারি অফ স্টেট মাইকেল আর. পম্পেও বলেছেন, “সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে মন্টেনেগ্রোর সাথে আমাদের সরাসরি সহযোগিতার কারণে আমরা রাশিয়ার সর্বশেষ ম্যালওয়্যারের বিরুদ্ধে প্যাচ তৈরিতে সক্ষম হয়েছি যা এখন বিশ্বের কোটি কোটি যন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখছে।”

২০১৭ সালে ন্যাটো’তে যোগদানকারী মন্টেনেগ্রোর কর্মকর্তা বলেন যে, এই যৌথ উদ্যোগ তাঁদের দেশের জন্য কাজে লেগেছে।

মন্টিনেগ্রোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী প্রেড্রাগ বস্কোভিচ বলেন, “স্পষ্টতই আমরা পশ্চিম বলকানের গণতন্ত্র রক্ষার নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি। ইউরোপের এই অংশটিকে যারা সংঘাত, বিপর্যয় ও অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে রাখতে চায়, তাদের কাছ থেকে সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে আমরা একটি উপায় খুঁজছি।

উত্তর ম্যাসিডোনিয়া ও ইউক্রেনের নেটওয়ার্কগুলোর সুরক্ষায় সহায়তা প্রদানের জন্যও যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার বিশেষজ্ঞগণ উভয় দেশে কাজ করেছেন। এই সহযোগিতা চলাকালে বিশেষজ্ঞগণ বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যার বিষয়ে শিখতে পেরেছেন।

সাইবার জগতের সংঘাত বিষয়ে নিবেদিত একটি অনলাইন প্রকাশনা ফিফথ ডোমেইনকে যুক্তরাষ্ট্র সাইবার কমান্ডের নির্বাহী পরিচালক ডেভিড লুবার বলেন, “তাঁরা আমাদেরকে তাদের সাথে নেটওয়ার্কের প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকায় কাজ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলো। তারপর আমরা সেখান থেকে সুদূরপ্রসারী মারাত্মক হুমকি ও ম্যালওয়্যার বিষয়ে কিছু অত্যাশ্চর্য ধারণা পেলাম এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেগুলোকে সারা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হলাম।”

প্রসারিত দৃশ্যে দেয়ালে বড় বড় স্ক্রিনযুক্ত বিশাল ও বৃত্তাকার কক্ষে বিভিন্ন ডেস্ক ও টেবিলে লোকজন (এনএসএ)
জাতীয় নিরাপত্তা অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে ইন্টিগ্রেটেড সাইবার সেন্টারে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি ও যুক্তরাষ্ট্র সাইবার কমান্ডের কর্মীরা নিবিড়ভাবে কাজ করছে। (এনএসএ)

ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি ২০২০ সালের মে মাসে স্যান্ডওয়ার্ম টিম নামে পরিচিত রাশিয়ার সামরিক সাইবার হামলাকারীদের সম্পর্কে একটি নির্দেশনা জারি করে। হামলাকারীরা ইউনিক্স-ভিত্তিক সিস্টেমের জন্য ব্যবহৃত এক্সিম মেসেজ ট্রান্সফার এজেন্ট (এমটিএ) সফ্টওয়্যারটির দুর্বলতা খুঁজে বের করেছিলো। এই দুর্বলতার কারণে ব্যবহারকারীরা এতে যুক্ত হতে পারে এবং এর সুরক্ষা বিন্যাসকে অকেজো করে দিতে পারে। তারপর সফ্টওয়্যার প্রস্তুতকারী তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য সিস্টেম হালনাগাদ করতে সফ্টওয়্যার প্যাচিংয়ের মাধ্যমে একটি পাল্টা ব্যবস্থা তৈরি করে।

২০১৯ সালের জাতীয় প্রতিরক্ষা অনুমোদন আইনে সাইবার কমান্ড দলগুলোকে প্রতিরক্ষা বিভাগের নেটওয়ার্কের বাইরে স্বাগতিক মিত্র দেশগুলোর আমন্ত্রণের প্রেক্ষিতে তাদের প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে সহায়তার জন্য কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার কমান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় কমান্ড বিভিন্ন দেশে সামরিক ও বেসামরিক সাইবার বিশেষজ্ঞদের সাথে কাজের মাধ্যমে ন্যাটোভুক্ত মিত্রদেশ এবং ইউরোপীয় দেশগুলোকে সম্ভাব্য হুমকি চিহ্নিত করে তথ্য আদান-প্রদানে সহায়তা করে থাকে।

পানামা খাল অঞ্চলের পানাম্যাক্স শীর্ষক বার্ষিক প্রশিক্ষণ অনুশীলনটিকে ২০১৯ সালে আরো সম্প্রসারিত করে এতে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পানামা খাল সুরক্ষায় প্রণীত এই প্রশিক্ষণে ২০টি দেশের বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করে।

জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ অন্যান্য কিছু দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্র কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সুরক্ষা বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

বিভিন্ন দেশকে তাদের সাইবার নিরাপত্তা জোরদারে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট কূটনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও বৈদেশিক সহায়তাও ব্যবহার করে থাকে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট সহযোগী দেশগুলোর সরকারের সাথে সরাসরি এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে এই কাজ পরিচালনা করে থাকে।

বিশ্বব্যাপী সাইবার নিরাপত্তার সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগী ও মিত্রদেশগুলোর সাথে কাজের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সাইবার হাতিয়ার ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট সংঘাতের ঝুঁকি কমিয়ে আনছে এবং বিশ্বব্যাপী সবার জন্য মুক্ত ও নিরাপদ ইন্টারনেট সুরক্ষিত করছে।