যুক্তরাষ্ট্র সরকার মানবপাচার বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা এই ভয়াবহ অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য নিবেদিত একটি নতুন প্রতিষ্ঠান চালু করেছে।
ভারপ্রাপ্ত হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) মন্ত্রী চ্যাড উল্ফ গত অক্টোবরে সেন্টার ফর কাউন্টারিং হিউম্যান ট্র্যাফিকিং নামে সংস্থাটির উদ্বোধনকালে বলেন, “মানবপাচার হচ্ছে আধুনিককালের দাসত্ব। এটা বর্ণনা করার আর কোন উপায় নেই।”
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সেন্টার ফর কাউন্টারিং হিউম্যান ট্র্যাফিকিং হবে মানবপাচার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সমন্বিত কার্যক্রম পরিচালনা কেন্দ্র। এর মনোযোগের জায়গাগুলো হচ্ছে ফেডারেল ফৌজদারি, দেওয়ানি ও প্রশাসনিক তদন্ত, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণে সহায়তা করা।
আরও থাকবে মানবপাচার প্রতিরোধের জন্য “ব্লু ক্যাম্পেইন” প্রচারণা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। এর মধ্যে বাধ্যতামূলক শ্রম এবং যৌন কাজের উদ্দেশ্যে পাচার উভয়ই অন্তর্ভুক্ত। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের ষোলটি পৃথক অঙ্গ এবং সদরদপ্তরগুলো সব ধরনের মানবপাচারের অবসান ঘটাতে একটি সার্বিক উদ্যোগ হিসেবে এই সেন্টারের কাজে অংশ নেবে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের অন্তর্ভুক্ত ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্সি ২০০৪ সাল থেকে মানবপাচার ঠেকাতে যেসব কাজ করেছে তার ওপর ভিত্তি করেই এগিয়ে যাবে সেন্টার ফর কাউন্টারিং হিউম্যান ট্র্যাফিকিং এর কার্যক্রম।
শুধু ২০১৯ অর্থবছরে আইসিই মানবপাচার বিষয়ে ১০২৪টি ঘটনা ধরেছে। এর মাধ্যমে ২১৯৭ জনকে ফৌজদারি অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া মানবপাচারের শিকার হওয়া ৪শর বেশি মানুষকে চিহ্নিত করা গিয়েছে।
আইসিই-র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টনি ফ্যাম বলেন, ‘অপরাধ চক্রগুলো সাধারণত একটি এলাকার সবচেয়ে অসহায় লোকদের শিকারে পরিণত করে। তারা তাদের মানুষ নয়, বরং পণ্য হিসেবেই দেখে।’
সেন্টার ফর কাউন্টারিং হিউম্যান ট্র্যাফিকিং এর লক্ষ্য ডিএইচএস এর ‘শিকারকে অগ্রাধিকার’ নীতি অনুসরণের মাধ্যমে মানবপাচার বন্ধ করা। এই উদ্যোগটি পাচারের শিকার ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণ, উদ্ধার ও সহায়তা আর পাচারকারীদের বিষয়ে তদন্ত ও বিচারের মধ্যে সমন্বয় করবে।
আইসিই-র হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন টিম মানবপাচারের ঘটনা তদন্তের ব্যবস্থাপনা অব্যাহত রাখবে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কথায়, এই কর্মীবাহিনীটি মানবপাচার ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার তদন্ত ও অপরাধীদের বিচারেরক্ষেত্রে বিশ্বে নেতৃস্থানীয় বলে বিবেচিত।
ভারপ্রাপ্ত হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) মন্ত্রী চ্যাড উল্ফ বলেছেন, ‘মানবপাচার আমাদের সময়ের সবচেয়ে মারাত্মক মানবাধিকার লংঘনের বিষয়গুলোর একটি। প্রতিটি মানুষকে নিরাপদ ও মুক্ত করা না পর্যন্ত আমরা এটি নির্মূলের লড়াই বন্ধ করবো না।’