মেধাসম্পদ সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে

বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগকারী, নির্মাতা ও উদ্যোক্তাদের সুরক্ষায় মানদণ্ড তৈরি করে দিয়েছে। এ দেশ বৈশ্বিক মেধাসম্পদ সূচকে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্সের অধীভূক্ত সংস্থা গ্লোবাল ইনোভেশন পলিসি সেন্টার প্রকাশিত ২০২০ সালের ইন্টারন্যাশনাল ইন্টেলকচুয়াল প্রোপার্টি ইনডেক্সের ফলাফলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভেনিজুয়েলার প্রাপ্ত অর্থনৈতিক নম্বরের তুলনা সংক্রান্ত গ্রাফিক্স (স্টেট ডিপার্টমেন্ট/ বি. ইনসলে)
(স্টেট ডিপার্টমেন্ট/ বি. ইনসলে)

আধুনিক বাণিজ্যের বুনিয়াদ হলো মেধাসম্পদের অধিকার। সরকার মেধাসম্পদের সুরক্ষা দিলে উদ্ভাবকেরা তাদের কঠোর শ্রম থেকে অর্থ আয়ের একক অধিকার ভোগ করতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ক্যাটেগরির সুরক্ষার মূল্যায়ন করে এবং প্রত্যেক দেশকে ৫০-এর মধ্যে নম্বর দিয়ে এই সূচক প্রত্যেক দেশের সার্বিক মেধাসম্পদ কাঠামোর র‌্যাংকিং করে থাকে।

৫০ এর মধ্যে ৪৭.৬৪ নম্বর অর্থাৎ প্রাপ্য নম্বরের ৯৫.২৮% (এক বছরে সঙ্গে আরেক বছরের র‌্যাংকিং প্রমিতকরণ করতে নম্বরগুলো শতাংশে প্রকাশ করা হয় ) পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র আবারও প্রথম হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, উদ্ভাবক, নির্মাতা, শিল্পী ও ব্যবসায়ীদের সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের যেসব আইন ও বিধিবিধান আছে, সেগুলো এই উচ্চ নম্বর প্রাপ্তির কারণ।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ২৫.৪৮ (৫০.৯৬%) নম্বর পেয়ে ২৮ নম্বরে স্থান পেয়েছে। সবচেয়ে নিচে ভেনিজুয়েলার অবস্থান ৭.১১ (১৪.২২%) নম্বর পেয়ে।

ইন্টারন্যাশনাল প্রোপার্টি ইনডেক্স প্রতিবেদনের মুখবন্ধে গ্লোবাল ইনোভেশন পলিসি সেন্টারের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী ডেভিড হার্শম্যান বলেন, “বৃদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের সুরক্ষা উদ্ভাবকদের বোঝাতে পারে যে, তাদের বিনিয়োগ মূল্যবান এবং তাদের কাজের দাম আছে।‘

এই সূচকে ৫৩টি দেশকে স্থান দেওয়া হয়েছে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির ৯০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।

এই সূচক বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সুরক্ষার নয়টি দিক বিবেচনা করেছে: পেটেন্ট, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক, ডিজাইন স্বত্ত্ব, গোপন বাণিজ্যকৌশল, বাণিজ্যিকীকরণ, প্রয়োগ, ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সদস্যপদ।

বেশি প্রবৃদ্ধির জন্য বেশি সুরক্ষা

গ্লোবাল ইনোভেশন পলিসি সেন্টারের প্রতিবেদন প্রমাণ করে কেন মেধাসম্পদের অধিকার সুরক্ষা দেশগুলোর জন্য লাভজনক। যেসব দেশ তাদের অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটাতে চায়, তাদের জন্য এটি একটি পথনির্দেশ হিসেবে কাজ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মেধাসম্পদের কার্যকর সুরক্ষা থাকলে দেশগুলো “মনের অভিনব বুদ্ধি ও সৃষ্টি নিয়ে….সেগুলোকে পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তি, ঔষধ ও সৃজণশীল কাজে রূপান্তরিত করতে পারে, যা আমাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করে।“

গ্রাফিক্সে আইপি সুরক্ষার গুরুত্ব (স্টেট ডিপার্টমেন্ট/বি. ইনসলে)
(স্টেট ডিপার্টমেন্ট/বি. ইনসলে)

কোন দেশগুলো মেধাসম্পদ অধিকার মান্য করছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সে বিষয়ে খোঁজখবর রাখে। বিশ্বজুড়ে মেধাসম্পদ সুরক্ষা পরিস্থিতি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “চীন এখনও নকল ও পাইরেটেড পণ্যের ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রধান উৎস।“

সিঙ্গাপুরের দারেন তাং ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক নির্বাচিত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানাতে গিয়ে গত ৫ মার্চ সেক্রেটারি অফ স্টেট মাইকেল আর পম্পেও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বিশ্বে সবচেয়ে উদ্ভাবনী। উদ্ভাবন, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সুযোগকে সচল রাখতে সুরক্ষিত মেধাসম্পদ অধিকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।“