যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে অংশীদারিত্বের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতীক (© শাটারস্টক)
(© শাটারস্টক)

যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে পুনরায় সমর্থন ও সহায়তা করা শুরু করেছে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২০ জানুয়ারি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে লেখা চিঠির মাধ্যমে বিগত প্রশাসনের গত জুলাই মাসে জাতিসংঘের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাকে ছেড়ে যাওয়ার প্রশাসনিক পরিকল্পনা থেকে সরে এসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে একত্রিতভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

“বিশ্বব্যাপী মরণঘাতি কোভিড-১৯ মহামারির পাশাপাশি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অন্যান্য অসংখ্য হুমকি মোকাবেলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে,” উল্লেখ করে বাইডেন চিঠিতে আরো লিখেছেন যে, “যুক্তরাষ্ট্র এই ধরনের হুমকি মোকাবেলা এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে এগিয়ে নিতে পূর্ণ অংশগ্রহণ করবে এবং  নেতৃত্ব দেবে ।”

প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের পর বাইডেনের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর একটি হলো কোভিড-১৯ অবসানে এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব জোরদার করার অংশ হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সহায়তা ও সমর্থন নবায়ন করা।

যুক্তরাষ্ট্র ও কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের সৈনিকগণ ২০২০ সালের ১৩ মার্চ তারিখে কোভিড-১৯ সংক্রমিত দক্ষিণ কোরিয়ার দাগু এলাকায় জীবাণুনাশক ছিটিয়ে দিচ্ছে (ইউএস আর্মি/স্পেশালিস্ট হেইডেন হলম্যান)

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শীর্ষ রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফৌচি গত ২১ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী পরিষদের এক সভায় বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বহুপাক্ষিকভাবে কাজ করবে এবং ভ্যাকসিন বিতরণ ও চিকিত্‌সায় — যেমন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাক্সেস (কোভ্যাক্স) উদ্যোগ এবং অ্যাক্সেস টু কোভিড-১৯ টুলস (এসিটি) এক্সিলারেটর — যৌথ প্রচেষ্টায় অংশ নেবে।

ফৌচি বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে সকল পর্যায়ে কারিগরি সহযোগিতাকে আমাদের সম্পর্কের মৌলিক অংশ হিসেবে দেখে, যার প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে এবং এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে একে আরো জোরদার করতে আমরা সচেষ্ট থাকবো ।”

এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন কোভিড-১৯ মোকাবেলা ও ভবিষ্যতের মহামারি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে আরো জোরদার করবে। নতুন প্রশাসন কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সাত দফা পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে যেখানে অন্যান্যের মধ্যে প্রমাণ-ভিত্তিক ধারাবাহিক নির্দেশনা, ন্যায্যতার সাথে ভ্যাকসিন ও চিকিত্‌সা প্রদান, এবং দেশব্যাপী বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনার মতো বিষয়গুলো রয়েছে।

প্রশাসন বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও জৈবপ্রতিরক্ষার জন্য হোয়াইট হাউজ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল অধিদপ্তর পুনরায় চালু করবে এবং রোগজীবাণুর চলাচল মনিটর করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের প্যাথোজেন-ট্র্যাকিং কর্মসূচি পুনরায় চালু করার পাশাপাশি রোগ শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর কার্যক্রম সম্প্রসারণ করবে।

কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ইউএসএআইডি মহামারি মোকাবেলায় সরকার, অলাভজনক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ১.৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। এই তহবিল ১২০টিরও বেশি দেশে জনস্বাস্থ্য শিক্ষার উন্নতি করে, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে সহায়তা করে এবং রোগের উপর নজরদারি করার মাধ্যমে জীবনরক্ষায় ভূমিকা রাখছে।