
যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য একটি নতুন কৌশল প্রকাশ করেছে যার মাধ্যমে এই অঞ্চল পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হবে এবং সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও অভিঘাতসহনশীল হবে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি এই কৌশল (পিডিএফ, ৩৪২ কেবি) প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে যুক্তরাষ্ট্র তার ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারদের প্রতি দেশটির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং এই অঞ্চলে কীভাবে আরো বেশি সম্পৃক্ত হবে এবং বৃহত্তর সহযোগিতার লক্ষ্যে কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে তার রূপরেখা প্রকাশ করেছে।
“ইন্দো-প্যাসিফিক হলো বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল অঞ্চল এবং এখানে ভবিষ্যতে যা হবে তার প্রভাব বিশ্বজুড়ে পড়বে,” কৌশলের উপর হোয়াইট হাউজ থেকে প্রকাশিত এক তথ্যপত্রে একথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে যে, “প্রেসিডেন্ট বাইডেনের লক্ষ্য হলো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আরো দৃঢ়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান গড়ে তোলা এবং এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলকে শক্তিশালী করা।”
ইন্দো-প্যাসিফিক বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের বাসস্থান এবং বিশ্বের অর্থনীতির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এখানেই।

যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একটি গর্বিত দেশ এবং দীর্ঘকাল ধরে এই অঞ্চলের গুরুত্বের কথা বলে আসছে। ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র যা করবে:
- একটি স্বাধীন ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক গড়ে তুলতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, মুক্ত গণমাধ্যম এবং সক্রিয় নাগরিক সমাজ বিনির্মাণে বিনিয়োগ করবে। এই প্রচেষ্টার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও উদীয়মান প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে এবং আকাশে ও সমুদ্রে আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখতে কর্মকান্ড পরিচালনা করা হবে।
- পরস্পর সংযুক্ত থাকতে চুক্তি জোট ও অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করা হবে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ানের ক্ষমতায়ন করা হবে।
- সমৃদ্ধি বাড়াতে স্বাধীন, ন্যায্য ও উম্মুক্ত বাণিজ্যের অগ্রগতির লক্ষ্যে কাজ করবে এবং অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করবে এবং সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক সুযোগের সম্প্রসারণ করা হবে।
- নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে মিত্র ও অংশীদারদের সাথে সহযোগিতা ও আন্তঃকার্যক্ষমতা বাড়ানো হবে, যাতে করে আগ্রাসন ও জবরদস্তি রোধ করা সম্ভব হয়। এছাড়াও উদ্ভাবনমূলক পদক্ষেপ মহাকাশ, সাইবারস্পেস এবং গুরুত্বপূর্ণ ও উদীয়মান প্রযুক্তিকেন্দ্রিক কর্মকান্ডের উপর হুমকি মোকাবেলায় সক্ষম করে তুলবে।
- অভিঘাতসহনশীলতা শক্তিশালী করতে অংশীদারদের সাথে কাজ করবে যাতে করে জলবায়ু ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের উপর আন্তর্জাতিক হুমকির কারণগুলো মোকাবেলার লক্ষ্যে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখা, জলবায়ুর প্রভাবের ঝুঁকি কমানো এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জোরদার করা যায়।
স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত ১২ ফেব্রুয়ারি ফিজির ডেনারাউ দ্বীপে এক বক্তৃতায় বলেছেন যে, ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারদের সাথে এক বছরের আলোচনা ও পরামর্শের ফলাফল হলো নতুন এই কৌশল এবং এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষের অগ্রাধিকারের উপর দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে।
“একুশ শতকের চিহ্নিত সকল বিষয় এই অঞ্চলে রয়েছে: জলবায়ু সঙ্কট, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির ভবিষ্যত্ এবং রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজেদের পথে স্বাধীনভাবে এগিয়ে যাবে নাকি তাদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী রাষ্ট্রের নিপীড়নের শিকার হবে,” উল্লেখ করে ব্লিঙ্কেন বলেন, “আমরা এই অঞ্চলের সর্বত্র আমাদের সম্পর্ক জোরদার করছি।”