মার্চ হচ্ছে ‘উইমেন্স হিস্ট্রি’ মাস। আসুন, যুক্তরাষ্ট্রের নারীদের জন্য রাজনীতির মাইলফলকগুলো দেখে নেওয়া যাক।
নারীদের ভোটাধিকার লাভ

১৮৫১-১৯২০। দাসপ্রথাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের ভোটাধিকারের দাবি ওঠে।এলিজাবেথ ক্যাডি স্ট্যান্টন (ডানে) ও সুজান বি অ্যান্টনি এতে নেতৃত্ব দেন। নারীরা ভোটাধিকার পান ১৯২০ সালে।
কংগ্রেসে নির্বাচিত হওয়া

১৯১৬ সাল। জিনেট র্যাংকিন প্রথম নারী হিসেবে কংগ্রেস সদস্য নির্বাচিত হন।মন্টানা অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি এ নারী জয়ের পর বলেছিলেন, “আমি হয়তো কংগ্রেসের প্রথম নারী সদস্য। তবে আমিই শেষ হবো না।”
প্রেসিডেন্টের ক্যাবিনেটে স্থান পাওয়া

১৯৩৩ সাল। ফ্রান্সিস পারকিন্স প্রেসিডেন্ট ফ্রাংকলিন ডিলানো রুজভেল্টের ক্যাবিনেটে শ্রম বিষয়ক মন্ত্রী হলেন।যুক্তরাষ্ট্রে তিনিই ক্যাবিনেটে অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রথম নারী।নিউ ডিল আইন প্রণয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারিগর ছিলেন পারকিন্স।এর মধ্যে ছিল ন্যুনতম মজুরির আইনও।
কংগ্রেসের উভয় কক্ষে প্রতিনিধিত্ব করা

১৯৪০-১৯৭৩ সাল। এ সময়কালে মেইন অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান রাজনীতিক মার্গারেট চেজ স্মিথ ছিলেন কংগ্রেসের উভয় কক্ষে প্রতিনিধিত্বকারী প্রথম নারী। চরিত্র নিয়ে সিনেটর জো ম্যাকার্থির আক্রমণের বিরুদ্ধে ‘ডিক্লারেশন অব কনসায়েন্স’ (বিবেকের ঘোষণা)হিসেবে সুপিরিচিত ভাষণের জন্য বিখ্যাত তিনি।
কৃষ্ণাঙ্গদের ভোটাধিকার আদায় করা

১৯৬৫ সাল। ডায়ান ন্যাশ আরও কয়েকজনকে নিয়ে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ছাত্র শাখার কার্যক্রম শুরু করেন।যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে ভোটাধিকারের জন্য প্রচার চালাতে থাকেন তিনি ।অহিংস কৌশল অবলম্বন করে ডায়ান ন্যাশ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কৃষ্ণাঙ্গ নারী ও পুরুষদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করান। এভাবে ১৯৬৫ সালের ভোটাধিকার আইন পাসে অবদান রাখেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে নামা

১৯৭২ সাল।শার্লি চিসম প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে বড় কোনো দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হন।তিনি বলেছিলেন, “আমার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সম্পদ হচ্ছে আমার মুখ যাকে পেশাদার রাজনীতিকরা ভয় পান। এখান থেকেই নির্গত হয় এমন সব জিনিস যা রাজনৈতিক সুবিধার কারণে কারও সবসময় আলোচনা করা উচিত নয়।’’
ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন লাভ

১৯৮৪ সাল।জেরালডিন ফেরারো প্রথম নারী হিসেবে কোনো বড় দলের হয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন পেলেন। স্যান ফ্রান্সিসকোতে ডেমোক্রেটিক দলের সেবারের জাতীয় কনভেনশনে বলেছিলেন ফেরারো, “আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে যে কোনো কিছুই করতে পারবো।”
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির রূপরেখা আঁকা

২০০১-২০০৯ সাল।কন্ডোলিৎসা রাইস ২০০১ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হন। প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনিই (২০০৫-২০০৯)।
রিপাবলিকান দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়া

২০০৮ সাল।রিপাবলিকান দলের প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হলেন সারা পেলিন।নিজেকে ‘হকি মম’ বলা আলাস্কার মেয়ে পেলিন মুস শিকার করে বনেই মাংস বানাতে দক্ষ।
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভ

২০১৬ সাল। হিলারি ক্লিনটন প্রথম নারী হিসেবে বড় কোনো দলের হয়ে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়লেন।তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের কাছে হেরে যান।তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমে অনেক কম বয়সী মেয়ে ও নারীকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।এর আগে হিলারি আইনজীবী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ছিলেন আরকানসাস অঙ্গরাজ্যের ফার্স্ট লেডি, যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি, নিউ ইয়র্কের সিনেটর ও দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জাতিসংঘে কার্যকর অবদান রাখা

২০১৭ সাল। নিকি হ্যালি মাত্র ৩৮ বছর বয়সে সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের প্রথম নারী গভর্নর নির্বাচিত হন। পরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেন তাকে। এর মধ্য দিয়ে প্রথম কোনো ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান ক্যাবিনেট পর্যায়ের পদে অধিষ্ঠিত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া

২০২০-২০২১ সাল। ২০২০ সালের নির্বাচনে ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর কামালা হ্যারিসকে ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বেছে নেন। এ বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি শপথ নিয়েছেন।হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট। এছাড়া প্রথম দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এবং প্রথম আফ্রিকান –আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি।
এই নিবন্ধটি মূলত ৩ মার্চ, ২০১৭ তে প্রকাশিত হয়েছিল।